কথামুখ সমকালীন প্রকাশন ১৯৯৮-এর নভেম্বরে পাটনা থেকে কমিউনিস্ট ইস্তাহার-এর যে হিন্দি সংস্করণ প্রকাশ করেছিল তার জন্য কমরেড বিনোদ মিশ্র এই কথামুখটি লিখেছিলেন।

লন্ডনে ১৮৪৭-এর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত কমিউনিস্ট লিগ-এর কংগ্রেস “পার্টির জন্য বিশদ তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক কর্মসূচী রচনার” ভার দিয়েছিল মার্কস ও এঙ্গেলস-এর ওপর। সেই অনুসারে মার্কস ও এঙ্গেলস ১৮৪৮-এর জানুয়ারি মাসে কমিউনিস্ট ইস্তাহার-এর খসড়া তৈরি করলেন,  আর ১৮৪৮-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সে বিপ্লবী অভ্যুত্থান ঘটার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে কমিউনিস্ট ইস্তাহার-এর প্রথম জার্মান সংস্করণ প্রকাশিত হল।

আধুনিক শিল্পের বিপুল বৃদ্ধি এবং তার ফলে শ্রমিকশ্রেণীর পার্টি সংগঠনগুলোর বিস্তার ও বিকাশের পরিপ্রেক্ষিতে, এবং বিশেষভাবে ১৮৭১-এর প্যারি কমিউননের অভিজ্ঞতার আলোকে ইস্তাহার প্রকাশিত হওয়ার সিকি শতাব্দী পর মার্কস ও এঙ্গেলস মনে করলেন যে, খুঁটিনাটি কিছু বিষয়ের দিক থেকে কর্মসূচী কিছুটা পুরনো হয়ে পড়েছে। তাঁরা বললেন, দ্বিতীয় অধ্যায়ের শেষদিকে কর্মসূচীর যে রূপরেখা দেওয়া হয়েছে তাকে নতুনভাবে লেখা দরকার। সমাজতান্ত্রিক সাহিত্যের সমালোচনীও এই অর্থে অসম্পূর্ণ ছিল যে, ১৮৪৭ পরবর্তী পর্যায়টি ঐ আলোচনার আওতার বাইরে থেকে গিয়েছিল। ইস্তাহারে বর্ণিত অধিকাংশ পার্টিও ততদিনে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তনও ক্ষমতাসীন দলের বিরোধী পক্ষের অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে কমিউনিস্টদের সম্পর্ক সম্বন্ধে অনেক মন্তব্যকেই অপ্রাসঙ্গিক করে তুলেছিল।

কমিউনিস্ট ইস্তাহার প্রকাশের সার্ধ শতক পূর্ণ হয়েছে। এই ১৫০ বছরে বিশ্ব পুঁজিবাদ সংকটের বড় বড় পর্যায়ের মধ্য দিয়ে গেছে, বিশ্ব বাজার দখলের জন্য লড়াই দুটি বিশ্বযুদ্ধে পরিণতি লাভ করেছে, সমাজতন্ত্রের বিজয়ের ফলে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর উদ্ভব হয়েছে। এসব সত্ত্বেও সমাজতন্ত্র ও পুঁজিবাদের মধ্যে দুনিয়াজোড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিংশ শতকের শেষ দশকে পুঁজিবাদই সমাজতন্ত্রের ওপর বিজয় অর্জন করেছে।

একমেরু বিশ্ব, নয়া অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, বিশ্বায়নের ভয়াবহ গতি, বহুজাতিক সংস্থাগুলোর সার্বিক আধিপত্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত বিপ্লব এবং আরও সাম্প্রতিক কালের তথ্য বিপ্লবের ফলে বিশ্বের যেন একটি গ্রাম হয়ে ওঠা – এগুলোই হল আজকের যুগের প্রাধন বৈশিষ্ট্য। শ্রমিকশ্রেণীর আন্তর্জাতিক সংহতিতে ফাটল, জনজাতি, নারীবাদী ও পরিবেশ আন্দোলনগুলোর উত্থান, উত্তর-আধুনিকতার দর্শন – এ সমস্ত কিছুই মার্কসবাদ এবং কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

সারা বিশ্বেই কমিউনিস্ট আন্দোলন আজ যখন এক মোড়ের মুখে, মার্কসবাদী বুদ্ধিজীবীরা তখন আজকের সমস্যাগুলোর সমাধানের দিশা পেতে নতুন করে চিরায়ত মার্কসবাদী সাহিত্যগুলো অধ্যয়ন করছেন। আর এ নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে, প্রতিটি প্রগতিশীল ব্যক্তির কাছেই কমিউনিস্ট ইস্তাহার আবার হাতে তুলে নেওয়া, নতুন করে অধ্যয়ন করাটা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

কমিউনিস্ট ইস্তাহার বলেছে, “আগেকার সকল যুগ থেকে বুর্জোয়া যুগের বৈশিষ্ট্যই হল উৎপাদনে অবিরাম বিপ্লবী রূপান্তর, সমস্ত সামাজিক অবস্থার অনবরত পরিবর্তন, চিরস্থায়ী অনিশ্চয়তা এবং এক টালমাটাল অবস্থা। অনড় জমাট সব সম্পর্ক ও তার আনুষঙ্গিক সমস্ত সনাতন শ্রদ্ধাভাজন কুসংস্কার ও মতামতকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা হয়, নবগঠিত সম্পর্কগুলো জমাট বাঁধার আগেই অচল হয়ে আসে। যা কিছু শক্তপোক্ত তা-ই যেন বাতাসে মিলিয়ে যায়, যা পবিত্র তা হয়ে ওঠে পার্থিব, শেষপর্যন্ত মানুষ বাধ্য হয় তার জীবনের আসল অবস্থা ও অপরের সঙ্গে তার সম্পর্কটাকে খোলা চোখে দেখতে।”

আমরা আরও দেখতে পাই, “আগেকার স্থানীয় ও জাতিগত বিচ্ছিন্নতা এবং স্বয়ম্ভরতার বদলে পাচ্ছি সর্বক্ষেত্রেই আদান-প্রদান, জাতিসমূহের বিশ্বজোড়া পরস্পর নির্ভরশীলতা। বৈষয়িক উৎপাদনে যেমন, তেমনই মনীষার ক্ষেত্রেও।”

ইস্তাহার আরও বলেছে, “সকল উৎপাদন-যন্ত্রের দ্রুত উন্নতি ঘটিয়ে যোগাযোগের অতি সুবিধাজনক উপায় মারফত বুর্জোয়ারা সভ্যতায় টেনে আনছে সমস্ত, এমনকি অসভ্যতম জাতিকেও। … এককথায়, বুর্জোয়া শ্রেণী নিজের ছাঁচে জগৎ গড়ে তোলে। … গ্রামাঞ্চলকে এরা যেমন শহরের মুখাপেক্ষী করে তুলেছে, ঠিক তেমনই বর্বর বা আধা-বর্বর দেশগুলোকে করেছে সভ্য দেশেরে ওপর, কৃষক-প্রধান দেশগুলোকে করেছে বুর্জোয়া-প্রধান জাতির ওপর, প্রাচ্যকে করেছে পশ্চিমের ওপর নির্ভরশীল।”

ওয়াকিবহাল পাঠক এই লাইনগুলোর মধ্যে আজকের বিশ্বায়নের এক অবিকল ছবি দেখতে পাবেন।

পুঁজির এই বিশ্বায়নের বিপরীতে শ্রমজীবী জনগণের আন্তর্জাতিকতাবাদ-এর যে ছবি মার্কস ও এঙ্গেলস এখানে এঁকেছেন তা সুস্পষ্টভাবেই যেমন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মধ্যে তেমনই শ্রেণীসমূহ ও জাতিগুলোর মধ্যেও জটিল আন্তঃসম্পর্ককে তুলে ধরে : “মেহনতিদের দেশ নেই। তাদের যা নেই তা আমরা কেড়ে নিতে পারি না। সর্বহারাকে যেহেতু সর্বাগ্রে রাজনৈতিক আধিপত্য অর্জন করতে হবে, দেশের পরিচালক শ্রেণীর পদে উঠতে হবে, নিজেকেই জাতি হয়ে উঠতে হবে, তাই সেদিক থেকে সর্বহারা নিজেই জাতি, যদিও কথাটার বুর্জোয়া অর্থে নয়। …

“যে পরিমাণে ব্যক্তির ওপর অন্য ব্যক্তির শোষণ শেষ করা যাবে, সেই অনুপাতে এক জাতি কর্তৃক অপর জাতির শোষণটাও বন্ধ হয়ে যাবে। যে পরিমাণে দেশের মধ্যে শ্রেণীগুলোর মধ্যেকার বৈরিতা মিলিয়ে যাবে, সেই অনুপাতে এক জাতির প্রতি অন্য জাতির শত্রুতারও অবসান ঘটবে।”

ইস্তাহার সুস্পষ্টভাবেই বলেছিল যে “আধুনিক রাষ্ট্রের প্রশাসন সমগ্র বুর্জোয়া শ্রেণীর সাধারণ বিয়গুলো সামলানোর একটা কমিটি মাত্র।” সংসদীয় গণতন্ত্রের সর্বাপেক্ষা উদার এবং বিস্তৃততম রূপেও আধুনিক রাষ্ট্র মূলগতভাবে অন্যকিছু হতে পারে না। এর বিপরীতে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সাধারণ জনগণের প্রকৃত গণতন্ত্রকে তুলে ধরে। এ সত্ত্বেও বুর্জোয়ারা যদি সমাজতন্ত্রের পরাজয়কে গণতন্ত্রের বিজয় বলে চালাতে সফল হয়ে থাকে তবে তার কারণকে আমাদের গভীরে গিয়ে অনুসন্ধান করতে হবে।

প্যারি কমিউনের (১৮৭১) অভিজ্ঞতার পর – যাতে সর্বহারা শ্রেণী পুরো দু-মাস ধরে রাজনৈতিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করেছিল – মার্কস এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত টেনেছিলেন যে “শ্রমিকশ্রেণী বিদ্যমান রাষ্ট্রযন্ত্রটাকে হস্তগত করে নিয়ে নিজের স্বার্থে তাকে চালাতে শুরু করবে – ব্যাপারটা এত সহজ নয়।” (ফ্রান্সে গৃহযুদ্ধ)

কাউটস্কির সঙ্গে বিতর্কে লেনিন তাঁর অতীব গুরুত্বপূর্ণ রচনা “রাষ্ট্র ও বিপ্লব”-এ এই তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্নটা তুলেছেন যে, বিপ্লবের পর পুরনো রাষ্ট্রযন্ত্রটাকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে নাকি তাকে ধ্বংস করা হবে। মার্কস ও এঙ্গেলসের টানা উপরোক্ত সিদ্ধান্তটির উল্লেখ করে লেনিন এই প্রশ্নের সুস্পষ্ট উত্তর দিচ্ছেন : পুরনো রাষ্ট্রযন্ত্রটাকে চূর্ণ করতে হবে। কেননা, বুর্জোয়া রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে রয়েছে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে জনগণের বিচ্ছিন্নতার ওপর ভিত্তি করেই।

লেনিন বলেছেন, পুঁজিবাদী সমাজে গণতন্ত্র সর্বদাই পুঁজিবাদী শোষণজাত সংকীর্ণ গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ, সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হন।

কাউটস্কি যেখানে সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর সংসদীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের মধ্যেই সর্বহারার সংগ্রামকে গণ্ডিবদ্ধ করতে চান, তার সম্পূর্ণ বিপরীতে লেনিন সর্বহারার প্রতিনিধিত্বমূলক সভার পক্ষে অভিমত পোষণ করেন। ঐ সভা হবে একই সাথে প্রশাসনিক ও আইনি কার্য পরিচালনার সংস্থা যেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার নির্বাচকমণ্ডলীর থাকবে; নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যে সমস্ত আইন রচনা করবেন সেগুলোর রূপায়ণের জন্য তাঁদের কাজ করতে ও দায়িত্ব নিতে হবে, বাস্তব জীবনে সেগুলোর ফলাফলকে পরখ করতে হবে এবং তাঁদের সরাসরি নির্বাচকমণ্ডলীর কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে।

লেনিন গুরুত্বের সঙ্গে বলেছেন, “জনগণের ব্যাপক সংখ্যকই শুধু ভোট দেওয়া ও নির্বাচনের ক্ষেত্রে নয়, রাষ্ট্রের দৈনন্দিন প্রশাসনে স্বাধীনভাবে অংশ নেওয়ার জন্য এগিয়ে যাবেন। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবাই পালা করে শাসন চালাবে এবং কেউই শাসন করছে না এরকম এক পরিস্থিতিতে দ্রুতই অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।” (রাষ্ট্র ও বিপ্লব)

লেনিন আরও বলেছেন, প্যারি কমিউন ছিল এই ধরনের এক সংগঠন এবং রুশ বিপ্লবের পর সোভিয়েতগুলোও এই ধরনের সংগঠন রূপে আত্মপ্রকাশ করে। রাষ্ট্র সম্পর্কে লেনিন এমনকি এই কথাও বলেছেন যে, কমিউনিস্ট সমাজের প্রথম পর্যায়ে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হল বুর্জোয়া রাষ্ট্রেরই অবশেষ : “রাষ্ট্র এই অর্থে বিপুল্ত হয় যে সেখানে কোনো পুঁজিপতি, কোনো শ্রেণী থাকে না, ফলে দমন করার জন্য কোনো শ্রেণীও থাকে না। কিন্তু রাষ্ট্র পুরোপুরি বিলুপ্ত হয় না, কেননা তখনও “বুর্জোয়া আইন”-এর রক্ষাকবচ থেকে যায় যা বাস্তব অসাম্যকে ন্যায়সঙ্গত প্রতিপন্ন করে। রাষ্ট্রের পুরোপুরি বিলোপের জন্য সম্পূর্ণরূপের সাম্যবাদ প্রয়োজন।”

এই কারণেই “তার প্রথম পর্যায়ে, বা প্রথম স্তরে, সাম্যবাদ অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণরূপে পরিপক্ক হয়ে উঠতে এবং পুঁজিবাদের পরম্পরা বা অবশেষ থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হতে পারে না। এই জন্যই তার প্রথম পর্যায়ে সাম্যবাদের “বু্র্জোয়া আইনের সংকীর্ণ দিগন্ত” বজায় রাখার চিত্তাকর্ষক ব্যাপারটা দেখা যায়। অবশ্য ভোগ্য বস্তুর বণ্টনের ক্ষেত্রে বুর্জোয়া আইন বলতে অবশ্যম্ভাবীরূপে বুর্জোয়া রাষ্ট্রকেই বোঝায়, কেননা আইনের নিয়মগুলোকে মানতে বাধ্য করার মতো যন্ত্র না থাকলে আইন কিছুই নয়।

“তাহলে দেখা যাচ্ছে যে সাম্যবাদী ব্যবস্থায় কিছুকালের জন্য বুর্জোয়া শ্রেণী না থাকলেও বুর্জোয়া আইন, এমনকি বুর্জোয়া রাষ্ট্রও থেকে যায়।”  (রাষ্ট্র ও বিপ্লব) প্যারি কমিউনের সময় থেকে সোভিয়েত ও চীন বিপ্লব পর্যন্ত বিস্তৃত সময়কালে সর্বহারা রাষ্ট্র নিয়ে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা আমরা দেখেছি। চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লব সর্বহারার রাষ্ট্র ক্ষমতার প্রকৃতি ও রূপ সম্পর্কে প্রাণবন্ত বিতর্কের জন্ম দেয়। সাম্প্রতিককালে সমাজতন্ত্র যে ধাক্কার মুখোমুখি হয়েছে তা ঐ বিতর্কগুলোকে তীব্রতর করে তুলেছে।

সমাজগণতন্ত্র যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্রকেই গণতন্ত্রের চূড়ান্ত সীমা বলে মেনে নেয়, সেখানে নৈরাজ্যবাদ সেকেলে যুক্তিতে সংসদীয় গণতন্ত্রকে নাকচ করে গণতন্ত্রেরই নেতিকরণ ঘটায়। মার্কসবাদীদের সামনে আজ বুনিয়াদী চ্যালেঞ্জটা হল, সংসদীয় গণতন্ত্রের সীমানা ছাড়িয়ে সর্বাপেক্ষা প্রসারিত রূপের সর্বহারা গণতন্ত্র খুঁজে বের করতে হবে যাতে আগামী শতাব্দীতে পুঁজিবাদের পরাজয় শুধু সমাজতন্ত্রের বিজয় নয়, গণতন্ত্রেরও বিজয় হয়ে ওঠে।

আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনে গত ১৫০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভুত প্রশ্নগুলোর অালোকে কমিউনিস্ট ইস্তাহারে অনেক পরিবর্তনই হয়তো আনা যায়, তবে মার্কস ও এঙ্গেলস ১৮৭২ সালের জার্মান সংস্করণের ভূমিকায় যেমন লিখেছিলেন, “ইস্তাহার একটা ঐতিহাসিক দলিলে পরিণত হয়েছে যাতে রদবদল ঘটানোর কোনো অধিকার আমাদের আর নেই।” বস্তুত, ঐ অধিকার আজ কারুরই নেই, তা বিশেষত এই কারণে যে, ঐ দলিলে বিধৃত নীতিমালা ১৫০ বছর আগে যেমন ছিল আজও মোটের ওপর সেই রকম সত্যি হয়েই রয়েছে। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে ঐ নীতিমালার রূপায়ণ নির্দিষ্ট দেশের ও নির্দিষ্ট সময়ের ঐতিহাসিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে।

– বিনোদ মিশ্র
সাধারণ সম্পাদক
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) লিবারেশন