প্রকাশের দিন তিনেকের মধ্যে প্রথম সংস্করণের সমস্ত কপি নিঃশেষ। এরাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার ও আগ্রাসী বিজেপির জনবিরোধী নীতি, বিভাজনের রাজনীতি ও শাসক দলের সন্ত্রাস-দুর্নীতিকে কোন পথে প্রতিহত করা হবে তা নিয়ে বামপন্থী মহলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ সম্পর্কে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরার এক বিনম্র প্রচেষ্টা এই পুস্তিকা। বামপন্থী রাজনীতি/আন্দোলনের একটি অংশ যখন দুর্বলতা ঢাকা দেওয়ার জন্য কংগ্রসেের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত, গণতন্ত্র-বিরোধী, শাসকশ্রেণীর অনুগত দলের সঙ্গে জোট/সমঝোতা করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, গণআন্দোলন/শ্রেণীআন্দোলন গড়ে তোলার তত্ত্ব ফেরি করছে তখন বাম আন্দোলনের সংগ্রামী, নীতিনিষ্ঠ অবস্থান কী হ‍ওয়া উচিত, অভিজ্ঞতাই বা কী বলছে তা স্পষ্ট করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। দুর্বলতা ঢাকতে গিয়ে দুর্বলতা আরও বে-আব্রু করলেন সিপিএম নেতৃত্ব। জোট করে ক্ষমতায় ফেরার বদলে দলের মধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। শৃঙ্খলাভঙ্গের নানাবিধ ঘটনা। পার্টি লাইনকে রক্ষা করার কথা যারা বলছেন, তাঁদের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিস্কার করা হচ্ছে (কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা কমরেড জগমতী সাঙ্গায়ান), 'উপদলীয়' চক্র বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। উল্টোদিকে যারা 'জোট রাজনীতির নৈতিকতা' রক্ষায় কংগ্রেসের সাথে মিছিলে হাঁটছেন (বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের কথা স্মরণ করুন) তাঁদের 'সতর্ক' করা হচ্ছে। 'শৃঙ্খলাভঙ্গের' বিরুদ্ধে এই দুই ধরনের শাস্তি বিতর্ককে আরও গভীর ও পরিষ্কার করল। নিছক বিতর্ক করাই লক্ষ্য হতে পারে না। দেশ ও রাজ্য জুড়ে শাসকশ্রেণীর হামলা ও গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের বিরুদ্ধে বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির জোরালো প্রতিরোধ গড়ে তোলার দায়িত্ব লড়াকু বাম-গণতান্ত্রিক শক্তিকেই কাঁধে তুলে নিতে হবে। রাজ্যজুড়ে আক্রান্ত-রক্তাক্ত মানুষের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। এ পথেই আমাদের পথ চলা। পথ বন্ধুর, কিন্তু জয় নিশ্চিত।

দ্বিতীয় মুদ্রণ : ১ জুলাই, ২০১৬