নতন্ত্রের প্রকৃত নেতিকরণ বা বিকল্প হল সাম্যবাদ, যা মানুষের দ্বারা মানুষের ওপর সমস্ত রকম শোষণের অবসান ঘটায়। কিন্তু এটা এক ঝটকায় অর্জন করা যায় না। সাম্যবাদে উত্তরণ প্রক্রিয়ার প্রথম নির্ধারক পদক্ষেপ হিসাবে সূত্রায়িত হয় সমাজতন্ত্রের বিষয়টি।

বুর্জোয়া সমাজব্যবস্থার গর্ভ থেকে সমাজতন্ত্রের উদ্ভব হয়, তাই সেই পুরনো সমাজব্যবস্থার নানা ছাপ অর্থাৎ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে নানা গলদ শুরুতে সমাজতন্ত্রের মধ্যে দেখা যায়। শ্রেণী ও শ্রেণীসংগ্রামের অবশেষগুলো রয়ে যায়, মাঝে মাঝে সেই সংগ্রাম খুবই তীব্র হয়ে ওঠে। সকলের মঙ্গলের জন্য মানুষ মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করে এবং সেই কাজের গুণ ও পরিমাণ অনুসারে উপার্জন করে। এই নিয়মটাই ফুটে ওঠে সমাজতন্ত্রের এই মূল সূত্রের মধ্যে : “প্রত্যেকের কাছ থেকে তার সামর্থ্য অনুসারে, প্রত্যেককে তার কাজ অনুসারে”।

প্রথম স্তর বা উত্তরণ পর্বের এই সমস্ত অপূর্ণতা বিজয়ী কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে ক্রমশ কাটিয়ে ওঠা হয়। শ্রেণী ও শ্রেণীসংগ্রাম আর সেইসঙ্গে রাষ্ট্রযন্ত্রও হয়ে পড়ে ইতিহাস। আসে সমাজতন্ত্রের দ্বিতীয় স্তর বা সাম্যবাদ। মানুষের প্রয়োজনীয় সবকিছুর প্রাচুর্য আর মতাদর্শগত ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতি এমন একটা স্তরে পৌঁছে যায় যেখানে সমাজ জোর গলায় ঘোষণা করতে পারে : “প্রত্যেকের কাছ থেকে তার সামর্থ্য অনুসারে, প্রত্যেককে তার প্রয়োজন অনুসারে”। অর্থাৎ একজন নারী বা পুরুষ তার কাজের মাধ্যমে যা দিতে পারে সমাজ ততটাই নেয় এবং তার যা কিছু প্রয়োজন তা তাকে দেয়।