ইংরাজি সংস্করণ : জুলাই ২০১২

বাংলা সংস্করণ : জানুয়ারী ২০১৪


যখন নেহরুর “নিয়তির সাথে অভিসার” সর্বগ্রাসী এক নিদারুণ মোহভঙ্গে পর্যবসিত এবং লক্ষ লক্ষ ভারতবাসীর জন্য ডেকে এনেছে গভীর সংকট তখন একজন মানুষই যিনি জনগণের কল্পনাকে এক নতুন স্বপ্নে উদ্দীপিত করেন। তিনি সেই স্বপ্নকে তাঁর অগণিত সহযোদ্ধাদের সাথে ভাগ করে নিলেন এবং এভাবেই মূর্ত করে তুললেন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের এক নতুন প্রজন্মকে দেশের নিপীড়িত গ্রামীণ দরিদ্রদের মধ্যে যে খুঁজে পেল তার নায়ককে। যাঁরা ছিলেন নিপীড়নের শিকার তারাই মুক্তিসংগ্রামের সাহসী যোদ্ধা হয়ে উঠলেন, কৃষিবিপ্লব হয়ে উঠল নয়াগণতান্ত্রিক ভারতের চালিকাশক্তি এবং ১৮৫৭-র অকীর্তিত নায়কেরা হয়ে উঠলেন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী দেশপ্রেমের ইতিহাসে নতুন অগ্রদূত।

এই হলেন চারু মজুমদার, নকশালবাড়ি এবং  সিপিআই(এম-এল)-এর রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত স্থপতি। ১৯৭০-এর দশককে মুক্তির দশকে পরিণত করার তাঁর আহ্বান সাফল্যমণ্ডিত হয়নি, কিন্তু ইতিমধ্যেই ১৯৬৭-র ২৫ মে (যেদিন দুনিয়া শুনলো নকশালবাড়ির কথা) থেকে ২৮ জুলাই ১৯৭২ (কলকাতার লালবাজারে পুলিশ লক-আপে যেদিন তাঁকে হত্যা  করা হয়) – এই কালপর্বে তিনি শক্তিশালী এক সজ্জিত মহড়াকে পরিচালনা করেছেন। চার দশক পরেও চারু মজুমদার, নকশালবাড়ি এবং সিপিআই(এম-এল) পুরনো ভারতের রক্ষকদের কাছে যেমন সবথেকে ভয়ানক দুঃস্বপ্ন হিসেবে রয়ে গেছে তেমন বেশি বেশি মানুষকে সামিল করে এক নতুন ভারত গড়ার সংগ্রাম তীব্রতর করার ক্ষেত্রেও প্রেরণা সঞ্চার করে চলেছে।

-- দীপঙ্কর ভট্টাচার্য