প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দুর্নীতিপরায়নদের অন্ধকারে রাখতে নোট বন্দীর সিদ্ধান্তকে গোপন রাখা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলগুলোকে বিদ্রুপ করে বলেছেন যে, ওরা এই জন্যই অভিযোগ করছে যে, ‘প্রস্তুতি' নেওয়ার সময় ওরা পায়নি। কিন্তু এই প্রশ্নটা উঠছে যে : মোদী নিজেই কি তার দল এবং বন্ধুদের এ সম্পর্কে আগেই অবহিত করেছিলেন এবং নোট বন্দীর পরিপ্রেক্ষিতে 'প্রস্তুতি' নেওয়ার যথেষ্ট সময় দিয়েছিলেন যাতে তারা কালো টাকার নিষ্পত্তি করতে পারে?

 

 

 

  • ২০১৬-র ৮ নভেম্বরের ঠিক আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সারা ভারতের বিজেপি নেতৃবৃন্দকে জমি কেনার নির্দেশ দেন। বিজেপির জাতীয় কার্যালয় তাদের নামে বিহার এবং উড়িষ্যায় লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের জমি কেনে। বিজেপির বিহারের নেতা সুশীল মোদী স্বীকার করেছেন যে, বিজেপি সম্ভবত দেশের ৩০০টি জেলায় জমি কিনেছে। এই টাকা বিজেপি কোথা থেকে পেল? নোট বন্দী ঘোষণা সম্পর্কে তারা কি ভিতর থেকেই খবর পেয়েছিল?
  • মোদী এবং অমিত শাহ বিজেপি সাংসদ এবং বিধায়কদের ২০১৬-র ৮ নভেম্বর থেকে তাদের টাকার হিসাব-নিকাশ জমা করতে বলেছেন। কিন্তু ২০১৬-র ৮ নভেম্বরের ঠিক আগে বিজেপির নিজের সরকারী হিসেব-নিকেশ এবং তার নেতৃবৃন্দের হিসেব-নিকেশ কি ছিল?
  • বিজেপি উত্তরপ্রদেশে তার কর্মীদের জন্য বিধানসভা ক্ষেত্র পিছু ৪টি করে মোটরবাইকও কিনেছে। ভারতে যখন নগদ টাকার অভাব চলছে, এই বিপুল টাকা বিজেপি জোগাড় করল কিভাবে? বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যেই দাবি করছেন যে, উত্তরপ্রদেশে প্রচুর নগদ টাকার আমদানি হবে যাতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনগণের ক্রোধের প্রশমন ঘটে।
  • সংবাদ সংস্থা আইএএনএস ১৭ ডিসেম্বর অনুল্লেখিত এক সরকারী সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এক বিশেষ বিমানে ৫০০০ কোটি টাকা উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতৃবৃন্দ প্রকাশ্যেই ঐ দাবিকে ছড়াচ্ছেন। একথা যদি সত্যি হয় তবে এটা আর একটা বিপুল কেলেঙ্কারি ছাড়া অন্য কিছু নয় : কেননা, আরবিআই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে কাজ করতে পারে না। সারা দেশ যখন দুর্দশার মধ্যে রয়েছে তখন বেছে বেছে নির্বাচন হতে চলা রাজ্যগুলোতে টাকা পাঠিয়ে কৃত্রিম ও সাময়িক সুরাহা করার এক্তিয়ার তাদের নেই।

নিরপেক্ষ সংস্থা দিয়ে বিজেপির এই নোট ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে হবে !

বিজেপি উত্তরপ্রদেশে প্রচুর বাইক কিনেছে

‘ভারতের পরিহাস' নামক ওয়েব পোর্টাল ২০১৬-র ১৪ ডিসেম্বর গোরখপুর থেকে জানিয়েছে : “জঙ্গল চ‍ৌরিতে আমরা বিজেপির স্টিকার লাগানো অন্ততপক্ষে ২৪৮টি টিভিএস বাইক দেখেছি, বিতরণের জন্য সেগুলো পার্ক করা আছে।"

এই বাইকগুলোর মধ্যে বিজেপির বেনিগঞ্জ অফিস অন্ততপক্ষে ১৮৮টা বাইক কিনেছে। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে প্রচারের জন্য প্রতিটি কেন্দ্র ৪টি করে বাইক পাবে।

রেজিস্ট্রেশন ফি সহ প্রতিটি বাইকের দাম মোটামুটি ৩৭১০৫ টাকা : এর অর্থ ২৪৮টা বাইক কিনতে লেগেছে ৯১৮০০০০ টাকা। এগুলো কি সাদা টাকায় কেনা হয়েছে? নির্বাচনী খরচের হিসাব-নিকাশে এই টাকা কি নির্বাচন কমিশনের কাছে দেখানো হবে?