স্মরণ করে দেখুন, ৮ নভেম্বর মধ্যরাত্রে নোট বাতিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘোষণার ঠিক পরের দিন ৯ নভেম্বরই সকালবেলায় সংবাদপত্রগুলোতে পুরো পাতা জুড়ে পেটিএম-এর বিজ্ঞাপন বেরোয়, বিজ্ঞাপনের মধ্যে থাকে খোদ প্রধানমন্ত্রীর ছবি। স্পষ্টতই পেটিএম কোম্পানির কাছে নোট বাতিল নিয়ে আগেভাগেই খবর ছিল, যার জন্য পেটিএম-এর বিজ্ঞাপন ইতিমধ্যেই তৈরি করা ছিল।

  • মোদী বলেন 'পেটিএম কর' – নগদহীন বেচা-কেনা কর, ডিজিটাল ব্যবস্থায় এগিয়ে চল। এর অর্থ হল সাধারণ মানুষের খুচরো বেচা-কেনা থেকে পেটিএম-এর মতো অনেক কোম্পানি এখন মুনাফা লুটবে। বিজেপি আগে খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের বিরোধিতা করেছিল এই যুক্তিতে যে তা খুচরো ব্যবসা ও 'মম-পপ' স্টোরগুলোকে জোরালো আঘাত হানবে। কিন্তু একবার ক্ষমতায় বসে তারা খুচরো ব্যবসায় বিদেশী বিনিয়োগের পক্ষে দাঁড়ায়। নোট বাতিলের মাধ্যমে নগদহীন অর্থনীতিতে ঢুকতে বাধ্য করাটাও খুচরো ব্যবসায় বড় বড় ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করবে। নগদহীন ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র কৃষিকাজ, মাছ-চাষ, দোকানপাট, ক্ষুদ্র শিল্প ও অসংগঠিত ক্ষেত্রগুলো গুটিয়ে আসবে এবং বড় বড় কর্পোরেটরা লাভ তুলবে।

  • উদ্দেশ্যমূলকভাবে কম মূল্যের নোটের বদলে ২০০০ টাকার নোট ছাপিয়ে, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে সিলিং-কে বহাল রেখে, নতুন নোট ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ার ক্ষেত্রে দেরী করে এবং নগদ টাকার অর্থ দুর্নীতি আর নগদহীন লেনদেন হল স্বচ্ছ বলে প্রচার করে মোদী সরকার নগদহীন লেনদেনে উৎসাহ যোগাচ্ছে -- এবং এইভাবে গরিবদের স্বার্থের হানি ঘটিয়ে কর্পোরেটদের স্বার্থ দেখছে।

  • উদ্দেশ্যমূলকভাবে আরবিআই থেকে বেসরকারী ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলোকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলোর থেকে বেশি টাকা যোগানো হচ্ছে। নোট বাতিলজনিত বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলোকে ক্রমেই খাটো করে তোলা হবে।