(ষষ্ঠ পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক-সাংগঠনিক রিপোর্ট থেকে)

(১) সারসংকলন করে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বহু এলাকায় জমির প্রশ্ন আজও কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে রয়েছে। তবে ভূমিসংস্কার কার্যকরী হওয়ার মাত্রা যেহেতু বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম, তাই ভূমিসংস্কার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাধারণ স্লোগানও বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রূপ গ্রহণ করে।

(২) আহর, পুখর, তালাও ইত্যাদি ক্ষুদ্র সেচের উৎসগুলির উপর, নদী ও বালুচর প্রভৃতি সাধারণ সম্পত্তির উপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সংগ্রামের এক প্রধান কর্মসূচি। সাধারণত, সামন্তশ্রেণীর লোকেরা ও মাফিয়া গোষ্ঠী এগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ খাটায়।

(৩) মজুরি, পুরুষ ও নারীর জন্য সম কাজে সম মজুরি, উন্নত কাজের অবস্থা, বসতবাড়ি জমি ও পাকা বাড়ি ইত্যাদি সারা দেশ জুড়েই গ্রামীণ সর্বহারার মোটামুটিভাবে সাধারণ দাবি হিসাবে উঠে এসেছে। জমি ও মজুরির ক্ষেত্রে, পাট্টা যেন নারী-পুরুষ উভয়ের নামে হয়, তার দাবি করতে হবে।

(৪) পঞ্চায়েত ও ব্লক অফিসে গ্রামীণ গরিবদের রিলিফের জন্য বা ছোটো ও মাঝারি কৃষকদের উপকারের জন্য বরাদ্দ অর্থ দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসাররা শক্তিশালী জমিদার ও কুলাকদের – যারা আবার রাজনৈতিক ক্ষমতাও নিয়ন্ত্রণ করে – সঙ্গে জোট বেঁধে আত্মসাৎ করে নেয় এবং দুর্নীতির এই সমস্ত ইস্যু জনসমাবেশ ঘটানোর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

(৫) জনজাতির প্রশ্ন – তা সে ঝাড়খণ্ড আন্দোলন অথবা আসামের পার্বত্য জেলা ও অন্যান্য জনজাতি এলাকার সংগ্রাম কিংবা অন্ধ্রপ্রদেশের গিরিজন আন্দোলন ইত্যাদি যে কোনো আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই আত্মপ্রকাশ করুক না কেন – আসলে কৃষক প্রশ্ন ছাড়া কিছুই নয়। আর এই কারণেই, সুদখোর-ব্যবসায়ীদের দ্বারা তাদের জমি হরণ তথা বনের জমি ও বনজ সম্পদের ওপর তাদের অধিকার ইত্যাদি বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসাবে রয়েছে।

(৬) যেখানেই আন্দোলন তীব্রতা অর্জন করে সেখানেই জমিদারদের নিজস্ব বাহিনী বা প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলগুলির গুণ্ডাবাহিনী পার্টির নেতা ও ক্যাডারদের খুন করে ও জনগণের গণহত্যা সংগঠিত করে। অবধারিতভাবে এর সঙ্গে নেমে আসে পুলিশী অত্যাচার।

(৭) নৈরাজ্যবাদী সংগঠনগুলি অর্থ সংগ্রহের যন্ত্রে অধঃপতিত হয়েছে এবং আমাদের ক্যাডার তথা জনগণের ওপর একের পর এক হত্যালীলা চাপিয়ে দিচ্ছে। নিজেদের সন্দেহজনক যোগসূত্রগুলি এবং সংগঠিত গণআন্দোলন ধ্বংস করার তাদের নোংরা উদ্দেশ্য আড়াল করতে তারা পুরোদমে অতি-বাম বুলি আউড়ে চলেছে।

নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিশেষ মনোযোগ দাবি করে :

(ক) আমরা মনে করি, কৃষি-পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ফারাকের দরুণ সর্বভারতীয় স্তরে সাধারণ কৃষক আন্দোলন ও একটি সুসংহত কৃষক সংগঠনের বিশেষ কোনো প্রাসঙ্গিকতা থাকছে না। অভিজ্ঞতা বিনিময় ও মাঝে মাঝে কর্মনীতি সংক্রান্ত ঘোষণা এবং সেমিনার, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি সংগঠিত করার জন্য একটি সর্বভারতীয় সমন্বয় কাঠামো থাকাই যথেষ্ট। এমনকি রাজ্যগুলিতেও কিষাণ সভার জেলা বা আঞ্চলিক স্তরের কাঠামোকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও স্বাধীন ভূমিকা পালন করতে হতে পারে, কারণ বড় বড় রাজ্যে বিভিন্ন অঞ্চলের পরিস্থিতির মধ্যে অনেক ভিন্নতা দেখা যায়। ব্যাপক কৃষকদের সমাবেশিত করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দাবি ও এলাকাভিত্তিক কৃষক সংগঠন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

কিষাণ সভার সাংগঠনিক কাজকর্ম শক্তিশালী করার দিকেও যথোপযুক্ত মনোযোগ দিতে হবে। অনেক জায়গায় কৃষকদের মধ্যে আমাদের প্রভাবের তুলনায়, এমনকি আমাদের কর্মসূচিগুলিতে যত মানুষ সামিল হন সেই তুলনায়, কিষাণ সভার সদস্যসংখ্যা অনেক কম রয়েছে। কিষাণ সভা সংগঠনের সক্রিয় উদ্দীপনার, এমনকি শত্রুর অত্যাচারের মধ্যেও এই সক্রিয়তা ধরে রাখার চাবিকাঠি রয়েছে গ্রাম কমিটির সজীব কার্যকলাপের মধ্যে। তাদের উচিত নিয়মিতভাবে কৃষক সমিতির গ্রামস্তরের সাধারণ সভা আহ্বান করে আন্দোলনের সমস্যাগুলি আলোচনা করা, সদস্যপদ নবীকরণ, এমনকি নতুন সদস্য গ্রহণের কাজও সাধারণ সভাতেই করা উচিত। গ্রাম কমিটিগুলিকে জনগণের ক্ষমতার স্থানীয় সংস্থা হিসাবে গড়ে তোলার পরিপ্রেক্ষিত থেকে শক্তিশালী করতে হবে। স্থানীয় মিলিশিয়াকে প্রশিক্ষিত করা ও গ্রামীণ আত্মরক্ষী বাহিনী গড়ে তোলার কাজ পরিকল্পিতভাবে হাতে নিতে হবে।

মামলাগুলি দেখাশোনা করার জন্য একটি আইনি সেল ও জেলের কমরেডদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখার জন্য একটি বিশেষ দল গড়ে তোলা প্রয়োজন।

যেখানেই সম্ভব, কিষাণ সভা সংগঠনের মধ্যে মহিলা সেল গঠন করা উচিত।

জনগণের মধ্যকার দ্বন্দ্বগুলিতে প্রথমেই পার্টির সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিবর্তে স্থানীয় কিষাণ সভার শাখাগুলি সেগুলি অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে মীমাংসা করতে পারে। অন্যথায় বিক্ষুব্ধ অংশের দ্বারস্থ হওয়ার মতো আর কোনো কর্তৃপক্ষস্থানীয় কেউ থাকছেন না এবং এর ফলে তাঁদের বিচ্ছিন্নতা ঘটতে পারে। আমাদের অভিজ্ঞতা দেখায় যে, নৈরাজ্যবাদী গোষ্ঠীগুলি বা রণবীর সেনার মতো শক্তিশালী এই ধরনের দ্বন্দ্বগুলি আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে রীতিমতো ওস্তাদ। সুতরাং জনগণের মধ্যকার দ্বন্দ্বগুলিকে অবশ্যই বিচক্ষণতার সাথে ও যত্ন সহকারে এবং কিষাণ সভার মাধ্যমে মীমাংসা করতে হবে।

(খ) কৃষি শ্রমিকদের বিষয়টি অবশ্য কেবল কৃষিক্ষেত্রেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাঁদের জন্য এক কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের দাবিও জোরালো হয়ে উঠেছে। উদারীকরণ ও বিশ্বায়নের অধীনে কৃষিতে ক্রমবর্ধমান পুঁজিবাদী অনুপ্রবেশের প্রক্রিয়া তা সে যে ধরনেরই হোক না কেন, কৃষি শ্রমিকদের বিষয়টিকে আরও সামনে ঠেলে দেবে।

তদুপরি, মধ্যম জাতের অংশসমূহ যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী হিসাবেও উঠে আসছে, কৃষক আন্দোলন কেবল ক্রমবর্ধমানভাবে পুঁজিবাদী চাষি ও ধনী কৃষকদের ব্যাপকতর অংশের সম্মুখীনই হতে পারে। কৃষি শ্রমিকদের আন্দোলন, অতএব, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যঞ্জনা বহন করবে। ভবিষ্যতের প্রস্তুতিতে, একটি কৃষি শ্রমিক সংগঠন চালু করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে ও বিষয়টির গভীর অধ্যয়নের জন্য আমাদের একটি প্রস্তুতি কমিটি সংগঠিত করতে হবে।

(গ) যখন আমরা বিভিন্ন বেসরকারি সেনার সঙ্গে শক্তিক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ি তখন কৃষক সমিতির কার্যকলাপ ও কৃষকদের ইস্যুগুলি নিয়ে আন্দোলন পিছনে চলে যায়। একথা ঠিক যে, এই পরিস্থিতি আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং এটি এড়িয়ে যাওয়ার বিশেষ কোনো উপায় আমাদের হাতে নেই। কিন্তু কৃষক সমিতির সক্রিয়তা কীভাবে ধরে রাখা যায় – এটিও তো খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এর সমাধান আমরা এখনও বের করতে পারিনি। সেনার সঙ্গে সংঘাতে একটু ফাঁক পেলেই কৃষি আন্দোলন শুরু করার চেষ্টা আমরা অনেকবার করেছি, কিন্তু এজন্য যথাযথ ব্যবস্থা বা মাধ্যম গড়ে তোলা যায়নি। মনে হয় কৃষক সমিতির রাজ্য নেতৃত্বের উদ্যোগ এরকম সন্ধিক্ষণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। আর নির্দিষ্ট দাবিভিত্তিক সংগঠনও এরকম পরিস্থিতির মোকাবিলায় খুবই সহায়ক হতে পারে।

(ঘ) গত কয়েক বছরে আমরা যে একের পর এক গণহত্যার সম্মুখীন হয়েছি তা পার্টির ভেতরে ও বাইরে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সবচাইতে সরলীকৃত ব্যাখ্যা উপস্থিত করেছে নৈরাজ্যবাদীরা এবং সংবাদ মাধ্যমের নিরাপদ জগতে থাকা বিশেষজ্ঞ ভাষ্যকাররা। তাঁদের মতে, সিপিআই(এমএল) সশস্ত্র সংগ্রাম ছেড়ে সংসদীয় সংগ্রাম ধরেছে বলেই জমিদাররা ১৯৭০ দশকের বদলা নিচ্ছে, অর্থাৎ ২৫ বছর আগেকার খতমগুলির বদলা নিচ্ছে। এটি একেবারেই অর্থহীন, দূরভিসন্ধিমূলক ও সবচেয়ে অবাস্তব মনোগত চিন্তার প্রকাশ।

মার্কসবাদী হিসাবে আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে, নতুন ধরনের বেসরকারি সেনার উদ্ভব ও পরপর গণহত্যার ব্যাপার বর্তমান রাজনীতির গতিপ্রকৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। একটু গভীরে অনুসন্ধান করলেই সহজে দেখা যাবে – বেসরকারি বাহিনীগুলির কাজকর্ম মূলত সেইসব এলাকাতেই তীব্রতা পেয়েছে ও কেন্দ্রীভূত হয়েছে, যেখানে আমরা প্রধান শাসক পার্টিগুলির প্রতি সংসদীয় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পেরেছি। ভোজপুরের সাহার ও সন্দেশ আর সিওয়ানের মেরোয়াঁ ও দরৌলি এরকমই এলাকা এমনকি বিষুণগড়ে জেএমএম (মার্ডি) গোষ্ঠীর মদতে এমসিসি-র হত্যাকাণ্ড এবং চাতরায় যে অংশটি বারাচট্টির ঠিক পাশে সেখানে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মদতে এমসিসি-র গণহত্যা আসলে আমাদের নির্বাচনী সম্ভাবনাকে দুর্বল করার সুচতুর পদক্ষেপ ছাড়া কিছুই নয়। কারণ এ দুটি নির্বাচনী কেন্দ্রেই আমরা যথাক্রমে জেএমএম (মার্ডি) ও আরজেডি-র সামনে সম্ভাব্য বিপদ হয়ে উঠেছি। চাতরায় গণহত্যার কয়েকদিনের মধ্যেই বারাচট্টিতে এমসিসি-র অভিযান এবং মালে ছেড়ে দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি তাদের হুমকি একথাই আরও স্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। এর ঠিক পরেই সিপিআই(এমএল)-এর সংশ্রব ত্যাগ করার জন্য বারাচট্টিতে আরজেডি প্রচার চালায়। বগোদরকে টার্গেট করাও এই সামগ্রিক পরিকল্পনারই অঙ্গ।

প্রশাসনযন্ত্রের সক্রিয় সহযোগিতায় বেসরকারি সেনাগুলিকে গণহত্যা সংঘটিত করতে দেওয়ার পর লালু যাদব সেখানে ক্ষতিপূরণ হাতে পৌঁছে যান। মানুষকে তিনি বলে অস্ত্র হাতে তুলে নিও না, পড়াশোনায় মন দাও, ইত্যাদি ইত্যাদি। ঘাতক আর পুরোহিত এইভাবেই পরস্পরের পরিপূরক হয়ে ওঠে। নৈরাজ্যবাদীরা আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে যতই সমস্যার সৃষ্টি করুক না কেন, শাসকশ্রেণীগুলির রাজনৈতিক আধিপত্যের সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ তারা ছুঁড়ে দেয় না। ১৯৭০ দশকে নির্বাচন বয়কটের আহ্বান ছিল সুতীব্র বিপ্লবী অগ্রগতির প্রকাশ আর ১৯৯০ দশকে তা অধঃপতিত হয়েছে চরম সুবিধাবাদী বিশ্বাসঘাতকতায়। পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এইভাবেই বিষয়গুলি তাদের দ্বান্দ্বিক বিপরীতে রূপান্তরিত হয়। নির্বাচন বয়কটের স্লোগান এই গোষ্ঠীগুলিকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগিয়ে নিতে ধূর্ত বুর্জোয়া রাজনীতিকদের সুবিধা করে দিয়েছে। নির্বাচনে জনতা দল প্রার্থীদের জন্য এমসিসি ও পিইউ ক্যাডাররা সক্রিয়ভাবে ভোট জোগাড় করছেন – এমন অনেক নিদর্শন আছে।

এছাড়া এও সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার যে আমরা সশস্ত্র প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়েছি। ঘটনা হল, জনগণকে সশস্ত্র করার ব্যাপার যে কোনো সময়ের তুলনায় বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংসদীয় রাজনীতির এতগুলো বছর ধরে বিহারে শত শত গ্রামে নিয়মিত গুলি বিনিময় ঘটে চলেছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে সমগ্র জেলা নেতৃত্ব সহ গোটা রাজ্য জুড়ে আমাদের হাজার হাজার কমরেডের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে প্রতিরোধ সংগঠিত করার অপরাধে। প্রায় গোপন অবস্থাতেই এঁদের কাজ করে যেতে হচ্ছে।

এককথায় আমাদের পশ্চাদপসরণ নয় বরং যথাস্থিতির শক্তিগুলির অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক আধিপত্য চ্যালেঞ্জ করে এক বড় শক্তি হিসাবে আমাদের অগ্রগতিই আমাদের ওপর এইসব তীব্র আক্রমণের আসল কারণ। একথা কখনও ভোলা উচিত নয় যে, রাজনৈতিক উদ্যোগ, জনপ্রিয় ইস্যুতে আন্দোলন এবং গণপ্রতিরোধ – এগুলিই হল সামন্তশক্তি-রাষ্ট্রশক্তির মিলিত আক্রমণ মোকাবিলা করার প্রধান উপাদান। যে কোনোভাবেই এই সেনা বা সেই সেনাকে শেষ করে দেওয়াই বড় কথা নয়। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, জনগণের রাজনৈতিক চেতনা উন্নত করা, সামাজিক-রাজনৈতিক শক্তিবিন্যাসে পরিবর্তন নিয়ে আসা এবং এই প্রক্রিয়ায় ব্যাপকতম গণসমাবেশ সুনিশ্চিত করা। অন্যথায় আমরা নিছক একটি জঙ্গী গোষ্ঠীতে পরিণত হব। তবে দীর্ঘায়ত সশস্ত্র সংঘর্ষ যেহেতু বিহারে কৃষক আন্দোলনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, পার্টিকে তাই নিজের প্রস্তুতির দিকটি বাড়িয়ে তুলতে হবে। বিশেষত শত্রুকে নির্ধারক আঘাত হানা কঠিন গুরুত্বপূর্ণ এবং সে জন্য প্রয়োজন সশস্ত্র দলকে উচ্চতর স্তরে সংগঠিত করা।