• সরকার ঘোষণা করেছে যে, ৩০ ডিসেম্বরের পরও কালো টাকা জমা করা যাবে, তার জন্য ৫০ শতাংশ কর দিতে হবে -- যে হার নভেম্বরের আগে চালু থাকা স্বেচ্ছা আয় ঘোষণা প্রকল্পের চেয়ে মাত্র ৫ শতাংশ বেশি। অতএব, কালো টাকার সঙ্গে যুদ্ধ চলার মাঝপথে সরকার শত্রুর সঙ্গে একটা বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে, এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের টাকা সাদা করতে দেওয়ার মাধ্যমে সেবা করার প্রস্তাব হাজির করেছে।

  • শেঠ, মালিক, সাহেব এবং মেমসাহেবরা কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা সামলাচ্ছেন, খুব বেশি হলে তাদের সামান্য অসুবিধা হচ্ছে।

  • গৌতম আদানি (যার কোটি কোটি টাকার অপরিশোধিত ঋণ সরকার সম্প্রতি মকুব করে দিয়েছে), বিজয় মাল্য (যিনি ব্যাঙ্ক লুট করে মোদী সরকারের সহায়তায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন) এবং ললিত মোদীর (মোদীর নিজের মন্ত্রীগণ এবং পার্টি নেতৃবৃন্দের সহায়তায় যিনি ভারতে দুর্নীতির অভিযোগকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়েছেন) মতো ব্যক্তিরা টুইটের মাধ্যমে বিমুদ্রাকরণের ভুরিভুরি প্রশংসা করেছেন। পানামা পেপারে যার নাম আছে, সেই ঐশ্বর্য রাই প্রকাশ্যেই বিমুদ্রাকরণের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। একটা 'দুর্নীতি-বিরোধী' পদক্ষেপ এইভাবে সবচেয়ে বেশি প্রশংসা পাচ্ছে দুর্নীতিপরায়ণদের কাছ থেকেই !

সারা ভারতেই সাধারণ মানুষের বিবাহ অনুষ্ঠান বিপর্যস্ত হল। কিন্তু বেলারির খনি ক্ষেত্রের চাঁই এবং বিজেপির পূর্বতন বিধায়ক দুর্নীতিতে ডুবে থাকা গলি জনার্দন রেড্ডি তার মেয়ের বিয়েতে এলাহি আয়োজন করে ৫৫০ কোটি টাকা খরচ করলেন, আর মুকেশ আম্বানি আমিরি চালে তার ভাগ্নির প্রাক-বিবাহ অনুষ্ঠানের আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজন করলেন। বিজেপি মন্ত্রী নীতীন গডকরি তার মেয়ের বিয়েতে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী সহ ভিআইপি অতিথিদের জন্য ৫০টি চার্টার্ড বিমানের ব্যবস্থা করলেন। বিজেপি মন্ত্রীদ্বয় বন্দারু দত্তাত্রেয় এবং অরুণ জেটলিও তাদের মেয়ের বিয়েতে এলাহি আয়োজন করলেন। অতএব, বিমুদ্রাকরণের জন্য আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে থাকা ব্যক্তি এবং অতি ধনীদের জীবন এবং সম্পদ একটুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।