(শহীদ কমরেড অনিল বড়ুয়ার স্মৃতিতে ২৪ মার্চ কলকাতায় অনুষ্ঠিত এক স্মরণসভায় বক্তব্যের অংশবিশেষ।
লিবারেশন, এপ্রিল ১৯৯৮ থেকে)
... এইভাবে এর থেকে (আলফা কর্তৃক কমরেড অনিল বড়ুয়ার হত্যা) অনেক প্রশ্নই উঠে এসেছে। অনেকে বলেন যে আঞ্চলিকতাবাদ মূলত একটি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন, আর তাই একে সমর্থন করা উচিত। নীতিগত দিক থেকে দেখলে এটি একটি যুক্তিগ্রাহ্য অনুসিদ্ধান্ত। কিন্তু আঞ্চলিকতাবাদ বা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের লড়াই সবসময়েই যে প্রগতিশীল হবে তার নিশ্চয়তা নেই। এমন কোনো সূত্রের অস্তিত্ব নেই। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি এই আন্দোলনগুলির দৃষ্টিভঙ্গির বিচার করেই সেগুলির প্রতি সমর্থন বা বিরোধিতার নীতি ঠিক করতে হবে। আমরা দেখছি তেলেগু দেশম, অগপ, আকালী দলের মতো আঞ্চলিক দলগুলি কট্টর সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপির দিকে ঢলে পড়ছে। আমরা খালিস্তানীদের দেখেছি, আর আজ দেখছি আলফা-কে। ক্রমে ক্রমে উভয়েরই নিশানা হয়ে উঠছে বামপন্থী শক্তিগুলি। অনিলদার হত্যায় এত বড় প্রতিবাদ উঠেছে বলে আপনারা এসব জানতে পারছেন। এর আগে সিপিআই-সিপিআই(এম)-এর বহু কর্মীকেও তারা হত্যা করেছে। পিসিসি সংগঠনের কর্মীদেরও হত্যা করা হয়েছে। টাটা টি-র মালিকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের যত আন্দোলন হচ্ছে। বাংলাদেশ-রাওয়ালপিণ্ডি-করাচিতে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। যথেচ্ছভাবে তারা আন্তর্জাতিক পাশপোর্ট জোগাড় করছে, কোটি কোটি টাকা জোগাড় করছে। তাদের আন্দোলনে এসব ব্যাপার যত বাড়ছে তত তারা বামপন্থী বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করছে। অনিল বড়ুয়ার ঘটনা কেবল একটি প্রতীক যা জানিয়ে দিচ্ছে যে আলফা আর গণতান্ত্রিক বা প্রগতিশীল শক্তি নেই। তাদের স্বাধীন আসাম তাই এক ফ্যাসিবাদী আসাম ছাড়া আর কিছুই হবে না। ... নির্বাচনের পর তারা ঘোষণা করেছিল, যে সমস্ত অসমীয়া নির্বাচনে ভোট দিয়েছে তাদের ৫৩ শতাংশ ভারতীয় নয়, আর তাই তাদের আসামে থাকার কোনো অধিকার নেই, এক মাসের মধ্যে তাদের আসাম ছেড়ে চলে যেতে হবে। তারা আসামে বসবাসকারী প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের উপর এই ফতোয়া জারি করেছে। আমাদের পার্টি আরও বলিষ্ঠভাবে এই বর্বরতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।